অনেকগুলো বদ-অভ্যাসের মাঝে একটা হচ্ছে আগে করে ফেলার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কোন কাজ একদম শেষ সময় পর্যন্ত ফেলে রাখা। এই অভ্যাসটা পরিহার করা আবশ্যক। যে কাজ যত দ্রুত সম্ভব আগে করে ফেলা প্রয়োজন। আপাতত টার্গেট হচ্ছে যে কোন কাজ ডেডলাইনের ১২ ঘণ্টা আগে শেষ করা। এটা করাটা খুব একটা কঠিন নয়। যে কোন কাজের ডেডলাইন প্রকৃত ডেডলাইন থেকে ১২ ঘণ্টা আগে সেট করতে হবে।
১৬ এপ্রিল:
সকালে ক্লাস করে ল্যাব মিটিং এ ছিলাম। পাইথন কোর্সের প্রজেক্টে আমাদের এক্সপেক্টেশন আর প্রফেসরের আশা মিলছে না। উনি মূলত ওনার পড়ানোর সাথে রিলেটেড কাজ দেখতে চান। কিন্তু আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ৪৩ গিগাবাইট টুইটস।
আজকে সন্ধ্যা গালিব ভাইয়ের বাসায় গেলাম। ওনার বাসায় অনেকক্ষণ ধরে গল্প হলো, খাওয়া দাওয়া হলো। ভাবী আসাতে সুবিধে হইছে। অবশ্য আগেও ওনার বাসায় গেলে খাওয়া পাওয়া যাইত 😀
ডিপার্টমেন্টের এলামনাই এসোসিয়েশন গঠিত হয়েছে। ভোটের আমেজটা ছিলো সবচেয়ে মজার। পুরো জাতীয় ভোটের মত আমেজ ছিলো। আজকে প্রথম মিটিং ছিলো কমিটির। ট্রিট নিয়ে আলোচনা চলছে। 😀
১৭ এপ্রিল:
এই দেশে ফলমূল খেয়ে দেশের মত মজা পাওয়া মুশকিল। অভ্যেসের কারণেই মনে হয় এখানে সব স্বাদহীন। আমি নিশ্চিত যে এখানকার মানুষরা আমাদের দেশের ফলে গন্ধ বেশি পাবে। তবে এখানে আম ভালো লাগে আমার। কয়েকদিন আগে শক্ত দেখে পাকা আম কিনেছিলাম। পাকা আম কাঁচা আম হিসেবে বানিয়ে খেয়ে ফেলেছি :P।
আজকে হোমওয়ার্ক নিয়ে ভালো প্রেসার গেছে। কোর্সে গ্রুপ ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ। উল্টোপাল্টা গ্রুপ হলে কাজ কম হয়, বিরক্তি বেশি কাজ করে।
১৮ এপ্রিল:
কার্জ-কর্ম খাওয়া দাওয়ায় পার হয়ে গেছে আজকের দিন। এগরিদম বইয়ের এক্সারসাইজ নিয়ে ঝামেলায় আছি। মাঝে মাঝে কয়েকদিন সময় লেগে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে নির্ধারিত সময় থেকে কমপক্ষে দ্বিগুণ সময় লেগে যাবে শেষ করতে। এক্সারসাইজ না করেও পড়ে ফেলা যায়। কিন্তু সেইক্ষেত্রে মনে হয়না দক্ষতা আসবে।
১৯ এপ্রিল:
আজকে কোর্স প্রজেক্টের জন্য আমাদের গ্রুপ ভালো বকা খাইছে। অবশ্য এই বকা খাওয়াটা কিছুটা হলেও এক্সপেক্টেড ছিলো। অন্যসব হোমওয়ার্ক এবং ডেমো ভালোভাবেই শেষ হয়েছে। ব্যাডমিন্টন খেলাটা কেমন যেন আগের মত আর জমে না।
২০ এপ্রিল:
আজকে সারাদিন কোড করেছি। পাইথনে কোড করতে আমার এমনিতেই মজা লাগে। যদি মনে হয় এই কোড করতে ৫ঘণ্টা সময় লাগবে দেখা যায় যে ২ ঘণ্টায় শেষ হয়ে বসে আছে শুধু পাইথনের জন্য। কোন এক সময় R-টাও চেষ্টা করতে হবে। এইটাও নাকি পাইথনের মতই খুব হায়ার লেভেলের লাইব্রেরি প্রোভাইড করে।
আজকে নামাজের পরে ২.৫ ঘণ্টার মত পিকনিক পিকনিক একটা অবস্থায় গেছে। আমরা মসজিদ থেকে বিরিয়ানি কিনেছিলাম। ওটা নিয়ে চলে গেলাম ভার্জুয়ান পার্কে। ওখানে বাতাসের জন্য ঠান্ডা লাগছিলো। পরে গাড়িতে বসে খাওয়া শেষ করে আমি আর ইভা কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়ালাম এদিক ওদিক। সামার আসাতে সবকিছু সবুজ হয়ে যাচ্ছে। ঘাসগুলো একদমই সবুজ হয়ে গেছে। 🙂
২১ এপ্রিল:
আগামী কয়েকটা দিন ভালো যন্ত্রনায় যাবে বলে মনে হচ্ছে। মাল্টিক্লাস ক্লাসিফিকেশন এর জন্য ডাটা লেভেলিং করতে হচ্ছে। বিরক্তিকর একটা কাজ। অনেকগুলো টুইটস পড়েও যখন লেভেল করার মত টুইট পেতে কষ্ট হয় তখন অসহায় মনে হয় নিজেকে। কোড করা থেকেও অনেক যন্ত্রনা এই কাজে।
এখানে বছরে দুইবার স্কুলের বাচ্চাদের জন্য ফুটবল (সকার) এর আয়োজন করা হয়। বলা যায় একদম মহা-উৎসব। ৫ বছর থেকে শুরু করে বাচ্চারা থাকতে পারে খেলায়। বয়স হিসেবে ভাগ করা হয় টিমগুলো। আরিজের বয়স ৬ বছর। ওদের টিমের খেলা দেখতে গেলাম। পিচ্চিগুলো মহা আনন্দে গেলে। কোচ থাকাতে ধীরে ধীরে বুজতেছে নিয়মকানুন।
সবচেয়ে মজা ওদের ভাবসাব দেখতে। পুরো প্রফেশনাল ভাব। একটু পরে এসে জুস খাবে, পানি খাবে। মাঝে মাঝে আবার প্লেয়ার চেন্জও হয়। 😀
আজকে আবহাওয়া ভালো থাকার আমরা বিকেলে ক্রিকেটও খেলতে গিয়েছিলাম। অবশ্য রাতে বাসায় এসে খবর হয়ে গেছে। জ্বর আসছে, সাথে দাতের মাড়ি ফুলে অবস্থা খারাপ ব্যআথায়। 🙁
২২ এপ্রিল:
বলতে গেলে আজকে সারাদিনই গেছে পিসির সামনে। চোখে হালকা ব্যাথা আর গায়ে জ্বর-জ্বর ভাব। এর মাঝে কালকে ল্যাব মিটিং এর জন্য কাজ করতে হচ্ছে। কাজ জমে গেছে। মাঝে মাঝে সহজ কাজও মিলতে চায় না। আবার মাঝে মাঝে খুব কঠিন কাজ হুট করে হয়ে যায়। আজকে পাইথনের ১২ নাম্বার হোমওয়ার্ক ছিলো। আর কোন হোমওয়ার্ক না থাকলেই ভালো। অবশ্য ড. চেন এর উপরে কোন আস্থা নাই। মনে হচ্ছে আরো ২টা হোমওয়ার্ক থাকবে আগামী ১০ দিনে।
২৩ এপ্রিল:
সকালে ল্যাব মিটিং ছিলো। মিটিং তেমন আহামরি কিছু হয়নি। ক্লাসিফিকেশনের কাজ আরো কিছুদিন করতে হবে। ঠিকমত মাসখানেক কাজ করে একটা পেপার সাবমিট করা খুব দরকার।
আজকে আমরা অনেক দিন পরে সেমাই খেলাম। অদ্ভুত হলেও সেমাই এর নাম ফেনী সেমাই। লাচ্ছা সেমাই ছিলো। খেতেও বেশ ভালো ছিলো। আজকে দিনে সব মিলিয়ে ভালো খাওয়া দাওয়া হয়েছে। ইভাকে নিয়ে বিকেলে রেক সেন্টারে গেলাম। আমি ব্যাডমিন্টন খেললেও ইভার বোধহয় বিরক্তিকর সময় গেছে ওখানে।