আমি মাঝে মাঝে দিবাস্বপ্ন দেখি। সব মানুষই বোধহয় দেখে। আমরা যা করতে চাই বা হতে চাই তাই কল্পনায় দেখতে চাই, করতে চাই। আবার আমরা স্মৃতিচারণও করি অনেক। অতীত নিয়ে আমরা নানানভাবে চিন্তা করতে চাই। অনেকেই আছে কষ্টের বিষয়গুলো নিয়ে বেশি চিন্তা করে, অনেকেই আবার আনন্দ নিয়ে। অনেকেই হতাশা, অপমান, কিংবা আরো নানান ভালো-খারাপ চিন্তাও করে। আমিও নানান ঘটনার কথা চিন্তা করি। চিন্তা করি ঘটনার সময় আমি যা করেছিলাম ঠিক করেছিলাম কিনা! তবে আমি বেদনার ঘটনাগুলো নিয়ে যতটা না চিন্তা করি তার থেকে বেশি সময় চিন্তা করি আনন্দের বিষয়গুলো নিয়ে। আমাকে কেন জানি মোটিভেট করে।
যেমন, নোয়াখালীতে একবার এক অটো চালকের সাথে আমি একসাথে আইসক্রিম খেয়েছিলাম। আমার খেতে ইচ্ছে করছিলো, ভাবলাম ওনার জন্যও একটা কিনে দেই। এরপর উনি আমাকে হাউজিং এ একদম বাসায় সামনে নামিয়ে দিলেন। কোনভাবেই থানার সামনে নামাতে রাজী হলেন না। আবার ভাড়া দিতেও খুব কষ্ট হয়েছিলো আমার। যদিও আইসক্রিমের দাম থেকে ভাড়া বেশি ছিলো। তাও নিবে না। পরে আমরা বন্ধুর মত হয়ে যাই অনেকটা। কিন্তু আইসক্রিমটা হাতে পাওয়ার পরে যে একটা চেহারা করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো তা আমি সহজে ভুলতে পারবো না। কেমন জানি নেশার মত। আমি একই চেহারা মানুষের মাঝে আরো দেখতে চাই। এইরকম অনুভূতির মত আনন্দের আর কিছু আমি পাইনি এখনও। এটাই আমার কাছে সত্যিকারের আনন্দ, সুখ বলে মনে হয়।
আমরা কিন্তু খুব বেশিদিন বাঁচি এমনটা বলা যাবে না। আমি ২-৩ জনকে জিজ্ঞেস করেছি জীবনের সত্যিকারের আনন্দের কিছু ঘটনা বলতে। ২৫-৩০ বছরের জীবনের মাঝে খুব বেশি আনন্দের ঘটনা যদি আমাদের না থাকে তাহলে বলা যায় অনেকটাই একপেশে এবং অদ্ভুত জীবন-যাপন করছি আমরা। এটা সত্যি যে ৩য় বিশ্বে আমাদের আনন্দের খুব বেশি কিছু নেই। নানান ঝামেলায় দিন পার হয়। তারপরেও আমরা অনেকেই অনেকের থেকে ভাগ্যবান। আমাদের দেশেই আমি বা আরো অনেকেই যে সুযোগ নিয়ে বড় হয়েছি তা অন্যেরা হয়নি। এখন পর্যন্ত কালকে কি খাব তা নিয়ে ভাবতে হয়নি। এরপরেও যদি আমরা শুদ্ধ আনন্দের ঘটনা খুব একটা মনে করতে না পারি তাহলে বুঝতে হবে জীবনটাকে ঠিকমত চালাচ্ছি-না আমরা। ভুল কাজকর্ম করে বেড়াচ্ছি। সত্যিকারের আনন্দ পাওয়ার মত কাজ করা দরকার আমাদের। এটা নিজের সাথে সাথে আশেপাশের মানুষদের মাঝেও আনন্দ ছড়িয়ে দেয়। 🙂