SEO এর টিউটোরিয়ালে আপনাদের স্বাগতম জানাচ্ছি।
কনটেন্ট ঠিকভাবে লিখার পরে SEO যে ব্যাপারটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো ব্যাকলিংক। আমরা আগেই জেনেছি যে, একটা সাইটের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো পেইজর্যাঙ্ক। আর পেইজর্যাঙ্কের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাকলিংক।
ব্যাকলিংক কি?
অন্য কোন সাইটে আপনার সাইটের লিংক থাকাটাই হলো ব্যাকলিংক। কনটেন্ট কিভাবে লিখতে হয়- এই পোস্টে আমরা দেখিয়েছিলাম কিভাবে Outbound or External লিংক দিতে হয়। আমরা আমাদের সাইট থেকে উইকিপিডিয়ার লিংক দিয়েছিলাম। আমরা যেহেতু উইকিপিডিয়ার লিংক দিয়েছি তার মানে এটা উইকিপিডিয়ার জন্য একটা ব্যাকলিংক। একইভাবে অন্য কোন সাইটের কোন কনটেন্টে বা মন্তব্যে বা অন্য কোথাও যদি আমাদের সাইটের লিংক দেয়া থাকে তাহলে সেটা আমাদের সাইটের জন্য ব্যাকলিংক হিসেবে গণ্য হবে।
একটা সাইটের বা কনটেন্টের যত বেশি ব্যাকলিংক থাকতে ওটা তত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাপারটা একটু সহজ করে ভাবা যাক। ধরুন আপনি ইলিশ মাছ নিয়ে খুব ভালো একটা আর্টিকেল লিখলেন। অনেক তথ্য উপাত্ত রয়েছে ওখানে। এখন ধরেন প্রথম আলো ইলিশ মাছ নিয়ে একটা ফিচার করবে। ওইটতে ওরা কোন একটা তথ্যসূত্র হিসেবে আপনার সাইটের কনটেন্টটা ব্যবহার করলো এবং লিংকআপ করলো। (যেভাবে আমরা উইকিপিডিয়ারটা করেছিলাম)। একইভাবে আরও অনেক ফোরাম বা ব্লগ ওয়েবসাইট ইলিশ মাছ নিয়ে লিখার সময় আপনার সাইটের তথ্য এবং আপনার সাইটের লিংক দিলো।
আবার ধরেন অন্য একটা ফোরাম বা ব্লগ সাইটের কোন একটা কনটেন্ট আছে ইলিশ মাছ নিয়ে। ওখানে কেউ একজন মন্তব্যে করে আসলো যে ইলিশ মাছ নিয়ে তিনি একটা কনটেন্ট পড়েছেন। ওখানেও অনেক ভালো ভালো তথ্য আছে যা কাজে লাগবে। এরপর তিনি আপনার সাইটের লিংক দিয়ে আসলেন।
এখন গুগল যখন ক্রলিং করতে যাবে তখন দেখবে ইলিশ মাছ নিয়ে লিখা অনেক কনটেন্টে আপনার সাইটের কনটেন্টটার রেফারেন্স বা লিংক আছে। এর মানে কি? এর মানে হলো আপনার কনটেন্টটা ভালো এবং বিশ্বস্ত ফলে সবাই এটার রেফারেন্স দিচ্ছে।
স্বাভাবিক ভাবেই এর পর থেকে ইলিশ মাছ লিখে সার্চ দিলে তার রেজাল্টে আপনার সাইটটা আগে দেখাবে গুগল। ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন তো?
এখন এটা হলো Natural Link Building. অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবেই আপনার কনটেন্ট ভালো ফলে এটার রেফারেন্স আসছে বারবার। এখন সমস্যা হলো আপনি ভালো একটা কনটেন্ট লিখলেই কিন্তু সবাই আপনার সাইটের রেফারেন্স ব্যাবহার করা শুরু করে দিবে না। আর ঠিক এই জন্যই আমাদের নানান সাইটে নিজেদের ব্যাকলিংক বানিয়ে গুগলকে বোঝাতে হয় যে আমার লিখা কনটেন্টটাও ভালো।
এখন ১টা জিনিস চিন্তা করেন। গুগল কোন সাইটের মূল কনটেন্টে অন্য কোন সাইটের লিংক পেলে ওটাকে যতটুকু গুরুত্ব দিবে ঠিক ততটুকু গুরুত্ব কি মন্তব্যে পাওয়া একটা লিংকে দিবে?
সহজ উত্তর, না দিবে না। মূল কনটেন্টের লিংক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এখানে একজন লেখক তার মতামত দিচ্ছে।
এইবার অন্য একটা বিষয় নিয়ে কথা বলা যাক। ধরেন একটা আর্টিকেল আছে দেশী মুরগীর উপরে। এখন ওই আর্টিকেলের মাঝে আপনার ইলিশ মাছের কনটেন্টের কোন একটা লিংক দেয়া হলো। লিংক দুইভাবে হতে পারে।
১. পুরো কনটেন্ট লিখার পরে এভাবে থাকতে পারে যে, আপনাদের যদি ইলিশ মাছ সম্পর্কে জানতে আগ্রহ থাকে তাহলে নিচের কনটেন্টটি দেখতে পারেন। এখন নিচের কনটেন্ট হিসেবে আপনার সাইটের কনটেন্টের লিংক দেয়া আছে।
২. দেশী মুরগী খুব জনপ্রিয় খাবার এই Anchor text এ আপনার সাইটের ইলিশ মাছের কনটেন্টের লিংক দেয়া হলো। অনেক সাইটেরই দেখবেন টেক্সট লিখা একটা কিন্তু লিংক অন্য কিছু নিয়ে।
বি.দ্র. Anchor text না বুঝলে আগের কনটেন্ট নিয়ে লিখা লেখাটা পড়ে নিন।
যাই হোক এখন উপরের ২টা লিংক কিভাবে দেখবে গুগল। প্রথমটা তাও কোনভাবে মেনে নিবে। যদিও খুব ভালোভাবে না। আর ২য়টা সম্পর্কে কি মত দিবে? এককথায় ফালতু। ধোঁকাবাজ লেখক। নিজের লিংক করার জন্য এই কাম করছে। এটা আমি আপনি যেভাবে বুঝবো গুগলও বুঝবে। আর তখনই হবে বিপদ। গুগল ধরে নিবে আপনি ইচ্ছা করে উল্টাপাল্টা ভাবে সাইটের লিংক করছেন আপনাকে সাইটটাকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে ভালো বলে তুলে ধরার জন্য। আর তখন গুগল আপনার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করে রাখছে। একদম মার্ক করে দিবে আপনার সাইট।
উপরের লিখাগুলো থেকে আমরা কি বুঝলাম?
ব্যকলিংক বেশ কয়েক-ভাবেই করা যেতে পারে। কি কি?
১. আর্টিকেল লিখার মাধ্যমে বিভিন্ন সাইটে (ব্লগ বা নরমাল)।
২. ফোরাম পোস্টিং এর মাধ্যমে।
৩. কোন ব্লগে মন্তব্যের মাধ্যমে।
৪. কোন ফোরামে মন্তব্যের মাধ্যমে।
উপরের যে যে পদ্ধতি আছে ওগুলোকে সাধারণত সার্চ ইঞ্জিন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে বা Natural মনে করে। এর বাইরে আরও কিছু আছে। যেমন:
১. ডাইরেক্টরি সাব-মিশন
২. লিংক এক্সচেঞ্জ (কারও সাথে চুক্তি। তোমার সাইটে আমার লিংক দাও আমার সাইটে তোমার লিংক দিব)
৩. অন্য সাইটে এড দেয়ার মাধ্যমে।
৪. ব্যাকলিংক কেনার মাধ্যমে। (অনেকের ভালো সাইট আছে তারা ব্যাকলিংক বিক্রি করে।)
যাই হোক এই সিস্টেমগুলো Natural না। তাই আমার মতে এইগুলো থেকে বিরত থাকা উত্তম। কেননা এতে উল্টো বিপদে পড়ার সম্ভাবনা আছে। অবশ্য এটা নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে।
তাহলে আমরা প্রথম ৪ রকম ভাবে ব্যাকলিংক করবো আমাদের সাইটের বা কনটেন্টের। এতক্ষণ ধরে আপনার যদি মন দিয়ে পড়ে আসেন তাহলে একটা জিনিস বোঝার কথা। তা হলো: প্রাসঙ্গিক ব্যাকলিংক। আপনার সাইটের কনটেন্টের সাথে যে সাইটের ব্যাকলিংক করবেন ওই সাইটের কনটেন্ট একই বা কাছাকাছি কিনা এটা। প্রাসঙ্গিক ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবসময় চেষ্টা করবো প্রাসঙ্গিক ব্যাকলিংক করতে।
এইবার আর একটা ব্যাপার জানা যাক। ওয়েবে তো হাজার হাজার সাইট আছে। সব সাইটের ব্যাকলিংক কি একই রকমের গুরুত্বপূর্ণ? এর উত্তরও না। একই গুরুত্বের নয়। যত বেশি PR (Page Rank) এর সাইটের ব্যাকলিংক তত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আলতু ফালতু সাইটের ব্যাকলিংক বরং বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই ভালো পেইজ র্যাঙ্কের সাইটের ব্যাকলিংক করতে হবে। যে কনটেন্টে ব্যাকলিংক করবেন তার পেইজর্যাঙ্ক ভালো না হলেও হবে। কিন্তু মূল ডোমেইন বা সাইটের পেইজর্যাঙ্ক ভালো হতে হবে। অন্তত PR 1 যেন হয়।
অনেক কিছুই জানলাম আমরা। এখন কিছু টেকনিক জানা যাক।
১. বিভিন্ন সাইটের কনটেন্ট বা মন্তব্যে লিংক আপনি দিয়ে আসছেন। এখন যদি একটা সার্চ ইঞ্জিন দেখে যে, যে সব জায়গা থেকে লিংক আসছে বেশিরভাগ জায়গায় আপনার নাম রয়েছে তার মানে হিসেবে ধরে নিবে যে, আপনি নিজে নিজে ব্যাকলিংক বানাচ্ছেন। তাই কি করবেন? এক এক সাইটে চেষ্টা করুক এক এক নামে কনটেন্ট বা মন্তব্যে করতে।
২. সরাসরি লিংক দিয়ে আসা থেকে Anchor Text এর মাধ্যমে লিংক দিয়ে আসা ভালো। যেমন:
পদ্মার ইলিশ খেতে বেশি সুস্বাদু। এখন পদ্মার ইলিশ এই লিখাটাকে Anchor হিসেবে লিংক দিয়ে আসবেন।
<a href=”Link of your site”> পদ্মার ইলিশ </a> খেতে বেশি সুস্বাদু।
ঠিক উপরের মত করে। আগের টিউটোরিয়াল দেখে নিন যদি বুঝতে সমস্যা হয়।
আমরা তাহলে শিখলাম কোথায় বা কেমন সাইটে এবং কনটেন্টে ব্যাকলিংক করতে হবে এবং কিভাবে করতে হবে। এরপরেও কিন্তু কাজটা সহজ নয়। কেননা দেখবেন যে, বেশিরভাগ ভালো সাইটেই মন্তব্য করার সুযোগ নেই। আবার একই রকমের কনটেন্ট খুঁজে পাওয়া মুশকিল যেখানে মন্তব্যে বা আর্টিকেল লিখা যায়। এইজন্য কাজ শুরু করার পর থেকে যখনই এমন কোন সাইট পাবেন যেখানে আর্টিকেল লিংক বা মন্তব্য করা যায় এবং তা অটো এপ্রুভ হয় তখনই আপনার চেষ্টা করবেন লিংকগুলো কোথাও সংরক্ষণ করতে যাতে পরবর্তীতে কাজে লাগানো যায়। যে রকম কনটেন্টেরই হোক না কেন সংরক্ষণ করবেন। কেননা পরে একই রকম কনটেন্টের জন্য কাজে লাগবে।
সবই বুঝলাম। কিন্তু আমি আমার সাইটের ব্যাকলিংক করার জন্য ভালো পেইজর্যাঙ্কের সাইট পেলাম না তখন কি করবো?
তখন যা পান তাতেই করা শুরু করে দিন। ভালো ভালো কনটেন্ট লিখতে থাকুন। যত বেশি সম্ভব সোশ্যাল সাইটগুলোতে শেয়ার করুন এবং ভিজিটর নিয়ে আসুন আপনার সাইটে। ভিজিটর যদি নিয়মিত আসতে থাকে তাহলে এটাকেও খুব গুরুত্ব দিতে থাকে সার্চ ইঞ্জিন।
আজ এ পর্যন্তই। কেমন হলো আজকের টিউটোরিয়াল জানাবেন। কিছু বুঝতে সমস্যা হলে প্রশ্ন করবেন। কোন ভুল যদি ধরা পড়ে তাহলে তাও জানাবেন। ভালো থাকুন সবাই।
সবগুলো টিউটোরিয়াল বা সিলেবাস দেখেন নিন নিচের লিংক থেকে। https://mykabir.info/?p=282