যে কোন ব্যাপারে বা জীবনে যে জিনিসটা আমার কাছে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং মনে হয় তা হচ্ছে “কেন (Why)?”। কেন আমি কম্পিউটারে পড়লাম, কেন আমি প্রোগ্রামিং করব, কেন কালকে ক্লাসটা করতে হবে, কেন আমার পিএইচডি করা দরকার, ইত্যাদি। যখনই এই কেন-কে ডিফাইন করতে ঝামেলা হয় তখনি সমস্যা লেগে যায়।
কোন কিছুতে ফোকাস থাকার জন্য কেন-টা খুব প্রয়োজন। কেন এই উত্তর খুঁজে বের করা যতটা প্রয়োজন তার থেকে প্রয়োজন এই উত্তরটা বিশ্বাস করা। আমাদের ব্রেইনের একদম ভিতরের জায়গাটা (যা নানান সিদ্ধান্ত নেয়) কথায় বিশ্বাস করেনা। ব্রেইন পাওয়া বা হারানোয় বিশ্বাস করে। এইজন্য সপ্তাহে কোনদিন ৬টায় উঠতে না পারলেও সকাল ৮টায় পরীক্ষার দিন ঠিকই উঠা হয় এবং সাথে সাথে শরীর কাজ করাও শুরু করে দেয়। ব্রেইন জানে, না উঠলে বিপদ আছে! এখানে কেন এর উত্তরের সাথে সাথে উত্তরটা আমরা বিশ্বাসও করি।
এই কেন-এর উত্তরের সাথে সাথে আবার আমাদের দীর্ঘস্থায়ী ফোকাসের ভালো সম্পর্ক আছে। উত্তর ঠিকঠাক না হলে ফোকাস সরে যায় এবং সাথে কেন-এর উত্তরও পাল্টে যায়। এর সহজ উদাহরণ হচ্ছে নিয়মিত পড়ালেখা করা। আমরা যখন ঠিক করতে পারিনা কেন পড়ছি তখন একটা ঝামেলা লেগে যায়। তখন আমাদের পড়াশোনাটা হয় পাশ করা এবং চাকুরীর জন্য। আর আমাদের ক্রিয়েটিভিটি ওখানেই থেমে যায়। আমি অনেকগুলো কোর্স শুধু পাশ করার জন্য পড়েছিলাম কয়েকদিন। সত্যি বলতে গেলে ওই কোর্সগুলোর টপিকও আমার ঠিকঠাক মনে নেই এখন। যে কোর্সগুলো পড়ার মোটিভেশন ছিলো জানার জন্য ওইগুলোর রেজাল্ট যাই হোক, ক্লাস যেমনই হোক, এখনও মনে আছে বিষয়বস্তু।
ঠিক এইজন্য আমরা যখন নিজের জন্য পড়ি তখন একটা জিনিস যতটুকু ভালো বুজি তার থেকে অনেক ভালো করে বুঝতে পারি যখন জিনিসটা কাউকে বোঝানোর জন্য পড়ি। আবার ঠিক এইজন্যই অনেকসময় মাস্টার থেকে বন্ধুরা আমাদের কোন টপিক ভালো বোঝাতে পারে। কেন-ই আমাদের ফোকাস ঠিক করে এবং আমাদের ড্রাইভ করে।
কেন-এর সঠিক উত্তরে জন্য আমরা ভুলভাল সিদ্ধান্ত নেই এবং ইমোশনাল হয়ে সময় এবং অর্থ নষ্ট করি। কোন কিছু করার আগে যদি কেন এর একটা গ্রহণযোগ্য উত্তর দাঁড় করানো যায় তাহলে অনেক সমস্যার সমাধানের সাথে সাথে অনেক সমস্যা এড়িয়েও যাওয়া যায়।